অনুকবিতা ১, ২, ৩
অনুকবিতা ১, ২, ৩
—————————— রমিত আজাদ
১।
তোমার হাত ধরি?
না।
আলতো করে স্পর্শ করলাম পিঠ।
ঝাঁকি দিয়ে পিঠ সরিয়ে নিলো সে।
আরেকটু মোলায়েম করে আরেকবার হাত রাখলাম পিঠে।
তার নরম হাত দিয়ে ধরে আমার রুক্ষ হাতটা ছাড়িয়ে নিলো সে।
দিন কয়েক অভিসারের পরে:
তোমার হাত ধরি?
না।
শুধু একবার?
না, না।
বিনা অনুমতিতে ধরলাম তার হাত।
মোলায়েম সেই হাতে কত যে মায়া!
এবার আর হাতটা ছাড়িয়ে নিলো না সে।
অন্য হাত দিয়ে আলতো করে হাত রাখলাম তার পিঠে।
নিরব রইলো সে।
ঝিলের ভেজা বাতাসে উড়ে উড়ে
তার রেশমী চুল মৃদু মৃদু আঘাত করতে লাগলো আমার মুখে।
সে বললো, “চুল সরিয়ে নেব?”
আমি বললাম, “না।”
তারপর একটু হেসে সে বললো, “মাঝে মাঝে জীবন খুব সুন্দর, তাই না?”
২।
তোমার বুকের আরো কতটুকু গভীরে অনুপ্রবেশ করলে
আমি জোড়া হিমালয় দেখতে পাবো?
ঐ দ্বিতয় এভারেস্ট ছুঁতে গেলে আমাকে দুর্দম তেনজিং হতে হবে।
হিমাঙ্কের যত নিচেই হোক না কেন গিরিশৃঙ্গের তাপমাত্রা,
আমি তাতে তপ্ত আঙুল ছোঁয়াবোই।
সেই উন্মত্ত স্পর্শের স্পর্ধায় হিম এভারেস্ট-ও হয়ে উঠতে পারে জীবন্ত অগ্নিগিরি!
তপ্ত লাভার উদগিরন নামতে পারে সুডৌল পর্বতের ঢাল বেয়ে।
তাতেই জ্বলে খাঁক হবে আমার পম্পেই নগরী।
প্রিয়তমা,
প্রজ্বলনের ইতিহাসে গড়তে, আমি বারংবার ভস্মিভূত হতে চাই!
৩।
সন্ধ্যার ঢাকা তুমি অভিসারী নগরী।
রিকশায় পথ চলি, আমি আর নাগরী।
বারিধারা, গুলশান, বনানীর পথঘাট,
অভিজাত এলাকা তো যথেষ্ট ফিটফাট।
পথ চলি রিকশায় পিঠে রেখে হাত তার,
বাতাসেতে ওড়ে চুল পুলকিত প্রেমিকার।
যেতে যেতে বললো সে, “খেতে চাই ফুঁচকা।
আছে নাকি কাছেপিঠে চটপটি ভ্যান-টা?”
পার্কের ওপাশেই ছিলো এক বিপণী,
খোলা ভ্যানে চলছে বিকিকিনি রজনী।
ফুটপাথে টুল পেতে দুজনায় বসলাম,
ফুঁচকার রসে রসে দুজনায় মজলাম।
জ্যাম হোক, যম হোক, তবু ঢাকা সুন্দর!
প্রেমিকার হাসি দেখে জুড়ায় যে অন্তর!
লেক পাড়ে বসে শুনি নাগরিক বাঁশরী।
সন্ধ্যার ঢাকা তুমি অভিসারী নগরী।
রচনাতারিখ: ২৩শে এপ্রিল, ২০২২ সাল
রচনাসময়: রাত ১২টা ১৯ মিনিট