একুশ বছর পর
———– রমিত আজাদ
আজ থেকে একুশ বছর আগে
আমি হারিয়েছিলাম প্রেম,
গিরিশৃঙ্গের মায়াবী কুজ্ঝটিকায়
থেমে গিয়েছিলো দেশাখ শাবরী গান।
কবিতাও আর লিখতে চাইনি কোন!
অধরা ধরিত্রীর প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে
শ্রোডিঙ্গারের বিড়ালের কাছে
সঁপে দিয়েছিলাম বিফল জীবন।
আজ আবার জ্বলেছে প্রদীপ মম মনে।
যে জ্বালালো নতুন দ্যুতি, সেও এক একবিংশতি।
তার মানে, আমি যখন বিরহ শোকে কাতর,
সেই ক্ষণে জন্মেছিলো মোর আজকের শিরি।
মানসপটে প্রেয়সীর মুখ চেয়ে
নির্ঘুম ছিলো গত একুশটি বছরের কয়েকশত রাত্রি।
দৈত্যকায় রবিকে একুশবার অর্থহীন প্রদক্ষীণ করেছে
ক্ষুদ্রকায় এক রুদ্র পাষাণ পৃথিবী।
নতুন শিরি কি পারবে অমৃত উষ্ণ চুম্বনে মুছে দিতে
একবিংশটি বর্ণহীন হেমন্তের একটি পুরাতন ক্ষত?
কেশ ভরা মাধবীলতার সৌরভে ধরে নেশা,
বসুধা রাত্রির আঁধারেও আছে সুর।
এখনো সোহাগী বিকেল আসে
ধ্বসে যাওয়া দূষিত শহরের প্রাঙ্গনে।
দগ্ধ নগরীর উত্তাপেও উতলা হয় মন।
আমি হয়তো নিজেকেই বেশী খুঁজেছিলাম,
তাই আর তোমাকে খুঁজে পাওয়া হয়নি।
যদিও তুষার জমিয়ে জমিয়ে দুজনে মিলে
গড়ে তুলেছিলাম নির্ভীক প্রহরী স্নোম্যান আর স্বপ্নের ইগলু।
তুহীন শীতে যে জমাট বরফ মুর্ত,
গ্রীস্মের উত্তাপে তা গলে যায় দ্রুত।
নতুন শিরি,
এবার আর আমি নিজেকে খুঁজবো না অহেতুক,
মূক হয়ে শুনে যাবো তোমার প্রত্যাদেশ।
শুধু তুমি আমাকে সোমেশ্বরীর পলি-কাদায়
তৈরী করে দাও অশরীরী নতুন একটি স্বপ্ন।
একটা মাত্র জনম, তবু তার কত যে রঙ!
ঋণ রয়ে গেছে যে কত মনুষ্যের কাছে!
তবু তার কথা মনে হতেই
বায়ুমন্ডল ঘিরে ধরে এক নিরানন্দ বিষন্নতা।
অর্থহীন মনে হয় সবগুলো সোনালী বিকেল।
আমি জীবনে মাত্র একবারই প্রেমে পড়েছিলাম!
একুশ বছর পর একবিংশতি শিরির সাথে
এবারের প্রেমটা কি প্রেম হবে?
—————————————————–
তারিখ: ৯ই অক্টোবর, ২০১৮
সময়: রাত ৯টা ৫৬ মিনিট