তাকে শাড়ী পড়ে আসতে বলেছিলাম
————————— রমিত আজাদ
বোশেখ মেলায় আসবে যদি, এসো তবে পড়ে শাড়ি,
শাড়ীর শোভায় দেখবো তোমায়, দীপ্ত শশির পূর্ণ নারী।
ভীনদেশী আর ভিন্ন পোষাক, আর কতদিন পড়বে?
শাড়ির বাহার না দেখিলে মন কি আমার ভরবে?
আকুলতার অনুরোধের কথা তুমি রেখেছিলে,
বিকিকিনির বোশেখ মেলায় শাড়ি পড়েই এসেছিলে।
নওজোয়ানীর রূপের সে ঢল ভাসিয়েছিলো সারা বেলায়!
কিন্তু মোদের হয়নি দেখা এবারের এই বোশেখ মেলায়।
মেলার আগে সকাল বেলায় টেলিফোনে বলেছিলে,
“আসছি আমি সবুর করো।” অপেক্ষাতেই রেখেছিলে।
অপেক্ষা নয় প্রতীক্ষাতে ছিলাম আমি অধীর মনে,
এই সুযোগে দেখবো তোমায় জরীন শাড়ি পড়নে।
বাঙালী এই প্রাচীন পোষাক আমার অতি দুর্বলতা,
শাড়ির ছোঁয়ায় নারী যে পায়, আকাঙ্খিত সে পূর্ণতা!
তোমায় আমি সে পূর্ণতায় মেলার ঢলে দেখতে চে’লাম,
কিন্তু হায়রে কেমন কপাল, পরিতুষ্টি কোথায় পেলাম?
অপেক্ষাতে থাকা আমি, একটি কলও পাইনি ফোনে!
দিন ফুরিয়ে সন্ধ্যা এলো, নামলো আঁধার আমার মনে।
নও বছরের আমোদ-প্রমোদ, বাজনা-গীতি থামলো পুরে,
কুহেল সাঁঝের বিষাদ সম রইলে তুমি দূরে দূরে।
ইলেকট্রনিক মোবাইল ফোনে তার পরদিন হলো কথা,
অবশেষে বলেছিলে গতকালের ক্লেশের ব্যাথা।
“মেলায় কি কাল এসেছিলে?”
“আমার আশায় বসে ছিলে?”
“তা নইলে বলছি কেন?”
“ইচ্ছে করে হয়নি জেনো!”
“শাড়ি পড়েই এসেছিলে?”
“শাড়ির মায়ায় ভেসেছিলে?”
“না ভাসলে বলবো কেন?”
“হ্যাঁ, শাড়িতেই ছিলাম জেনো।”
“আমায় কেন কল দিলে না?”
“তুমি কেন খোঁজ নিলে না?”
“চষেছিলাম সারা মেলা, তোমার দেখা পেলাম না তো!”
“মা যে আমার সাথে ছিলো, বাধা ছিলাম আমিওতো।”
“ও, তাহলে এই ঝামেলা, যেই কারণে হয়নি দেখা!”
“কাছে এসেও হয়নি দেখা, কেমনে বোঝাই মনের ব্যাথা?”
আসবে আবার বোশেখ মেলা একটি বছর সূর্য ঘুরে,
সে বোশেখ কি মোদের হবে? নাকি সেদিন থাকবো দূরে?
কেই বা জানে, কেমন হবে সেই বোশেখের নতুন বেলা!
হয়তো তুমি জায়া হবে, নতুন ঘরে পাতবে মেলা!
রচনাতারিখ: ১৬ই অক্টোবর, ২০২০ সাল
সময়: রাত ০৩টা ১৩ মিনিট
She in Saree
—————– Ramit Azad