প্রাক্তন প্রেমিকার সাথে কিছুক্ষণ – পর্ব ১০
—————————– ড. রমিত আজাদ
পর্নো দেখা ঠিক কি বেঠিক? পর্নো সাইটগুলো খোলা রাখা হবে না বন্ধ করে দেয়া হবে? এই নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করা যেতে পারে। আমি, ব্যবসায়ী বন্ধু তুষার ও পুলিশ অফিসার বন্ধু আরিফ তিন বন্ধু বসেছিলাম আড্ডায়। কয়েকজন পুরুষ একসাথে বসলে কিছুক্ষণ পরে এম্নিতেই নারী বিষয়ক আলোচনা শুরু হয়ে যায়। আলোচনা যখন তুঙ্গে ওঠে তখন আদিরসাত্মক কৌতুকের ছড়াছড়ি শুরু হয়। আমাদের আজকের আড্ডায় পর্নোগ্রাফি বিষয়টি উঠে এলো।
তুষার: আচ্ছা তোরা কি মনে করিস? পর্নো সাইটগুলো কি চালু রাখা উচিৎ না বন্ধ করে দেয়া উচিৎ?
আমি: ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতে পর্নো ওয়েবসাইট নিষিদ্ধ নিয়ে দারুন হৈচৈ হয়েছিলো। সরকারী এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতাই হয়েছে বেশী।
আরিফ: তোরা তো অনেকগুলো বছর বিদেশে ছিলি। তোরা ওখানে কি দেখলি পর্নো সাইটের চাহিদা কেমন?
তুষার: পশ্চিমে তো এর চাহিদা অনেক। দেখতেই তো পাস ছবি নির্মাতা ও অভিনেতা-অভিনেত্রীরা তো বেশীরভাগই পশ্চিমের।
আরিফ: (আমার দিকে তাকিয়ে) আর পূবের অবস্থা কি?
আমি: ওদিকে যখন সমাজতন্ত্র ছিলো। তখন তো পুরোদস্তুর নিষিদ্ধ ছিলো। তারপর পরিবর্তনের হাওয়া লেগে প্রথমে ওভারলুক করা শুরু হলো, তারপর তো ধীরে ধীরে ওপেনই হয়ে গেলো।
আরিফ: ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলবি?
আমি: দেখ চলমান ছবি আসার আগে তো আর পর্নোম্যুভি নির্মান শুরু হয়নি। জানিসই তো মার্কিন বিজ্ঞানী ও উদ্ভাবক টমাস এডিসন ম্যুভি ক্যামেরা ও প্রজেক্টর আবিষ্কার করেন ১৮৮৮ সালে। তারপর উনারাই প্রথম দিককার শর্ট ফিল্মগুলো নির্মান করেছিলেন উনার সেই বিখ্যাত “The Black Maria” স্টুডিওতে। ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো ১৮৯৬ সালে ঐ এডিসনের নির্মিত ‘The Kiss’ ছবিটিতেই কিন্তু প্রথমবারের মত চলমান ছবিতে নারীপুরুষের চুম্বন দৃশ্য দেখানো হয়। আজ এটা মামুলি মনে হলেও সেই সময়ে এটা সাহসী প্রদর্শনই ছিলো। সুতরাং পর্নোম্যুভি নির্মানের ঘটনা বেশীদিন আগের ঘটনা নয়।
তুষার: ইন্টারেস্টিং! প্রথম ছবিতেই যৌনতা!
আরিফ: হু, চলমান ফিল্ম তো এই সেদিনের ব্যাপার। তবে তার আগে?
আমি: এর আগে প্রিন্ট মিডিয়ায় পর্নো ছিলো। বিভিন্ন পত্রিকা বই ইত্যাদিতে ছবি ও গল্পসহ ছাপা হতো।
তুষার: তোর খেয়াল আছে সুলতান একদিন যোগার করে এনেছিলো একটি পর্নো ম্যাগাজিন। ঐ প্রথম আমরা নরনারীর দৈহিক সম্পর্কের ছবি দেখেছিলাম। আমরা কিন্তু বেশ আনন্দই পেয়েছিলাম সেদিন!
আরিফ: হ্যাঁ। লজ্জ্বা, উৎকন্ঠা আনন্দ সব একসাথেই ছিলো সেদিন।
আমি: তখন আমরা ক্লাস টেনে পড়তাম তোর মনে পড়ে?
তুষার: ইতিমধ্যে আমরা ‘মাসুদ রানা’ সিরিজ পড়া শুরু করে দিয়েছিলাম। আর আদিরসাত্মক আনন্দ পেতে ঐই ছিলো আমাদের সম্বল।
আমি: কাজী আনোয়ার হোসেন নরনারীর চিরাচরিত ঐ বিষয়টিকে শিল্পায়িত করার চেষ্টা করেছিলেন। এরপর তো ওরকম অনেক গল্প-উপন্যাসই পড়েছিলাম। আমাদের বাঙালী অনেক খ্যাতিমান লেখকের লেখায় তো যৌনতার ছড়াছড়ি ছিলো। সেই সময়ে ওগুলো নিয়ে আমাদের আলোচনার কথা মনে আছে?
আরিফ: অনেকে বলে এগুলো হলো সাহিত্যের ভেজাল। গল্প-উপন্যাসের মধ্যে ওগুলো থাকলে তার কাটতি বাড়ে।
তুষার: আবার আরেকজন বলেছে, না ওগুলো সাহসী লেখা। সমাজে বিষয়গুলো আছে। আমরা ওভারলুক করে যাই। বা অনেক সময় সরাসরি অস্বীকারও করি। ঐ লেখকরা সাহস করে কথাগুলো বলে ফেলেছেন।
আমি: আমাদের কৈশোর ও তারুণ্যের জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদের লেখাতেও কিন্ত দেহজ বিষয়গুলো এসেছে।
আরিফ: হ্যাঁ, তবে তিনি প্রকট কিছু লেখেননি, মাইল্ড করে লিখতেন।
আমি: প্রাচীন সাহিত্যে, যেমন, পৌরাণিক কাহিনীগুলোতে যৌনতার বর্ণনা খুবই উম্মুক্ত ও প্রকট। সেটা প্রাচ্যে হোক আর প্রতিচ্যে হোক। সেখানে নারী পুরুষের বিভিন্ন অঙ্গের ফুলানো-ফাঁপানো বর্ননাও রয়েছে।
আরিফ: আচ্ছা, বিষয়টি কতদিনের পুরোনো হতে পারে?
আমি: যতদিন থেকে সভ্যতা আছে, ততদিনেরই পুরাতন হবে। প্রাচীন যুগের অনেক ছবি ও মুর্তিতে যৌনতা তো প্রকটভাবেই প্রদর্শিত হয়েছে। অস্ট্রিয়ার দানিয়ব নদীর তীরে পাওয়া Venus of Willendorf হলো ম্যান মেইড প্রথম নগ্ন মূর্তি, চার ইঞ্চি দৈর্ঘের মুর্তিটির বয়স ২৫০০০ বৎসর। গ্রীক বলি আর রোমান বলি সবাইই গণনাতীত সংখ্যাক চিত্রাঙ্কন রেখে গেছেন heterosexual sex, homosexual sex, orgie ইত্যাদির। তৃতীয় শতাব্দিতে রচিত ভারতীয় কামসূত্র তো একটা শাস্ত্র হিসাবেই স্বীকৃত। এছাড়া ভারতের মধ্যপ্রদেশের খাজুরাহো মন্দির সহ আরো অনেক মন্দিরেই যৌনকর্মের ভাস্কর্য্য পরিপূর্ণ আছে, যাদেরকে প্রেমমূলক কামদ শিল্পকর্ম ও ভাস্কর্যের জন্য সুপরিচিত বলা হয়ে থাকে।
আরিফ: আই সি!
আমি: রোম সম্রাট কালিগুলা-কে নিয়ে নির্মিত ‘কালিগুলা’ ফিল্মে দেখবি সবকিছুই নগ্নভাবে প্রদর্শন করা হয়েছে। চিত্র পরিচালক চেয়েছিলেন যে সেই সময়ের প্রকৃত চিত্রই যেন ফিল্মে ফুটে ওঠে। জোনাথন সুইফটের লেখাগুলোতেও প্রকট যৌনতা এসেছে।
তুষার: তোরা ভ্লাদিমির নাবোকভ-এর ‘ললিতা’ পড়েছিস?
আমি: একটা টিন এজড মেয়ের সাথে বয়স্ক পুরুষদের অনৈতিক সম্পর্কের কথা উঠে এসেছে ঐ উপন্যাসে। এরপর বেশ হৈচৈ হয়েছিলো। এত বিকৃত রুচির লেখা নিয়ে। খুব সম্ভবত এটা নিষিদ্ধও করা হয়েছিলো।
আরিফ: হ্যাঁ। আমি পড়েছিলাম। বলা হয় ওটা বাস্তব ঘটনা থেকেই নেয়া।
আমি: একইভাবে, ‘টপিক অব ক্যান্সার’ প্রকাশিত হওয়ার পর হৈচৈ পড়ে গিয়েছিলো, প্রশ্ন উঠেছিলো, মার্কিন সমাজ কি এতটাই উশৃঙ্খল? লেখক হেনরি মিলার চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছিলেন যে এর অনেক কিছুই তিনি বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন।
আমি: আমাদের পারিবারিক লাইব্রেরীতে একটা বিশাল মোটা বই ছিলো। ওর নাম ছিলো সহস্র এক আরব্য রজনীর গল্প। পুরো বই জুড়ে যৌনতার গল্পই বেশী, আর ছিলো হাতে আঁকা যৌন উত্তেজক নানান ছবি।
তুষার: পৌরাণিক বা প্রাচীন কাহিনীগুলোতে যদি এত খোলামেলা বর্ননাই থেকে থাকবে, তাহলে পরের সাহিত্যগুলোয় কি হলো?
আমি: বিংশ শতাব্দির বাংলা সাহিত্যে সেখানে কিছুটা প্রলেপ দেয়া শুরু হয়েছে। খোলাখুলি বা সরাসরি যৌনতা তুলে না ধরে একটু ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। তবে সাহিত্য শতভাগ যৌনতামুক্ত ছিলো না। রবি ঠাকুর থেকে শুরু করে আল মাহমুদ পর্যন্ত কেউই যৌনতামুক্ত লেখা লেখেননি।
তুষার: কি করে লিখবে বল? সাহিত্য হলো জীবনের দর্পন। জীবন তো আর যৌনতা মুক্ত নয়, তাই সাহিত্যও যৌনতামুক্ত রাখা সম্ভব নয়।
তুষার: আচ্ছা, যৌনতা জীবনেরই অংশ, তাই সাহিত্যেও ওগুলো এসেছে। আমরা ঐসব বই লুকিয়ে লুকিয়ে পড়তাম কেন রে?
আমি: যৌনতা সম্পর্কে কমবেশী সব সমাজেই টাবু রয়েছে। আমাদের বাংলাদেশের সমাজে এই টাবুটি মারাত্মক। তোদের মনে আছে, আমাদের কিশোর বয়সে এই নিয়ে কথা বলাও কতটা লজ্জ্বার বিষয় ছিলো?
আরিফ: হ্যাঁ, লজ্জারই তো ছিলো!
আমি: অতিরিক্ত টাবুর কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে।
আরিফ: কি রকম?
আমি: বিশিষ্ট দর্শন প্রাবন্ধিক মোতাহার হোসেন চৌধুরী উনার একটি লেখায় লিখেছিলেন, ‘এভাবে আমাদের সমাজে ছোটবেলা থেকেই যৌনতাকে খারাপ মনে করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই কৈশোর বয়সেই হয় প্রথম প্রেম, এবং যথারীতি সেই প্রথম প্রেম এর মেয়েটির সাথে বিয়ে বা কোনরূপ যৌন সম্পর্ক হয়না। অবশেষে যৌন সম্পর্কটি হয় পরিণত বয়সে নিজ স্ত্রীর সাথে। যেহেতু ছোটবেলা থেকে আমরা জেনে এসেছি যৌন সম্পর্ক খারাপ। তাই যার সাথে যৌন সম্পর্ক হয়েছে, মানে নিজ স্ত্রীর সাথে, তাকে অর্থাৎ নিজ স্ত্রী-কে খারাপ মনে হয়। এবং তার প্রতি শ্রদ্ধাবোধও কমে যায়।
আরিফ: বড় সাংঘাতিক কথা বলেছিলেন তো! এই কথার বেশ গুরুত্ব রয়েছে।
আমি: আজকাল অবশ্য আমাদের দেশে পশ্চিমের মত অনেকেরই নিজ স্ত্রীর আগেই অন্য কারো সাথে প্রি-মেরিটাল সেক্স হয়, কিন্তু যৌন সম্পর্ক হওয়ার কারণে ঐ মেয়েটাকে খারাপই মনে হয়। অথচ হয়তো মেয়েটি পুরুষের প্রতি ভালোবাসার কারণেই নিজেকে সপে দিয়েছিলো!
আরিফ: হু ভাবনার বিষয়!
আরিফ: এখন আমাকে বল, ইস্ট ইউরোপে পর্নো কিভাবে প্রবেশ করলো?
তুষার: আমার মনে হয়। ইস্ট এর আগে ওয়েস্ট-টা একটু বলি।
আমি: বল।
তুষার: এই যে আমরা ওয়েস্ট-কে ফ্রী সেক্স কান্ট্রী বলি, এটা কিন্তু বেশীদিনের পুরাতন নয়।
আরিফ: এই বললি, হাজার হাজার বছরের পুরাতন, আবার এই বলছিস বেশীদেনের পুরাতন নয়?
আমি: না প্রাচীন যুগের কথা ঠিকই আছে। তবে মনোথেইজম আসার পর, বিষয়টার উপর কড়াকড়িও আরোপ করা হয়েছিলো। জানিস তো ওয়েস্টে ডার্ক এইজ ছিলো।
আরিফ: ডার্ক এউজে কি সেক্স ছিলো না?
আমি: সেক্স থাকবে না কেন? ঐ ছাড়া কি পৃথিবী চলবে নাকি? তবে তার উম্মুক্ততায় নিয়ন্ত্রন আরোপ করা ছিলো।
তুষার: যদিও এডিসন নির্মিত ফিল্মেই চুম্বন দৃশ্য এসেছিলো। তবে নারীর নগ্ন দেহ তো দূরের কথা। তাদেরকে শর্ট ড্রেসেও কখনো চলমান ছবিতে দেখানো হয়নি।
আমি: পশ্চিমা সমাজেও এই বিষয়ে টাবু ছিলো। এই টাবু ভাঙা শুরু হয় পঞ্চাশের দশকে 1950–55 television series Space Patrol -এ। ঐ ছবিতেই প্রথম মেয়েদেরকে মিনিস্কার্ট পড়া অবস্থায় দেখানো হয়।
আরিফ: এর আগে কি শর্ট ড্রেসের প্রচলন পশ্চিমে ছিল না?
আমি: আরে না। সমাজে তো ছিলোই না, ফিল্ম-এও ছিলো না। ফিল্মি জগতে শর্ট ড্রেসে মেয়েদেরকে দেখিয়ে প্রথমে চোখ সইয়ে আনে। তারপর ধীরে ধীরে সমাজেও প্রচলিত হয়ে যায়।
তুষার: আরিফ তুই যদি টেনিস প্লেয়ারদের সেই সময়কার ছবি দেখিস, দেখবি যে মেয়েরাতো অবশ্যই, এমনকি ছেলেরাও ফুলপ্যান্ট পড়ে, ফুলহাতা শার্ট পড়ে টেনিস খেলতো।
আরিফ: আই সি! তাহলে প্লেবয়, পেন্টহাউস এইসব পত্রিকা কবেকার?
আমি: প্লেবয় ম্যাগাজিনের ফার্স্ট ইস্যুটি বেরিয়েছিলো ১৯৫৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। পেন্টহাউস ম্যাগাজিনের প্রথম ইস্যুটি বেরিয়েছিলো ইংল্যান্ড থেকে ১৯৬৫ সালের মার্চ মাসে, আর ইউএসএ থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিলো ১৯৬৯-এ। কয়েক দশক আগেও প্লেবয় ম্যাগাজিনের সম্পাদকের বিরুদ্ধে নারীদের মিছিল হয়েছিল।
তুষার: আচ্ছা শর্ট ড্রেসে সমস্যাটা কি?
আমি: শর্ট ড্রেস বা আটশাট পোষাক তো প্রাচীনকালে বা প্যাগান যুগে ছিলোই। কিন্তু মনোথেইজম আসার পর সেখানে গা ঢাকা ঢিলেঢালা পোষাক প্রচলিত হয়। এটাই শালীনতা।
আরিফ: ভেবে দেখ, একটা মেয়ে তোর কাছে এলো, তার গায়ে শালীন পোষাক আর আরেকটা মেয়ে এলো তার গায়ে শর্ট ড্রেস বা শরীরের বাঁক ফুটে ওঠা আটশাট পোষাক, কার প্রতি কি অনুভূতি জাগবে তোর?
তুষার: উত্তেজক পোষাক পরে যখন একটা মেয়ে সামনে এসে দাঁড়ায় তখন পুরুষের মনে বাসনা জাগা কি স্বাভাবিক নয়?
আরিফ: হুম বিষয়টি ভাবনারই বটে! তা ইস্ট ইউরোপ সম্পর্কে কি বলতে চাচ্ছিলি যেন, সেটা বল।
আমি: তোর মনে পড়ে যে, আমরা এইচ.এস.সি. পরীক্ষা পাশের পর দশ-বারোজন বন্ধু মিলে অন্য শহরে বেড়াতে গিয়েছিলাম, আর ঐ বেড়ানোতে আমাদের প্রধান আকর্ষণ ছিলো, ভিডিও এনে পর্নো ফিল্ম দেখা। ওটাকে আমরা তখন ট্রিপল এক্স ম্যুভি বলতাম।
আরিফ: (লাজুক হেসে) কাঁচা বয়সের ব্যাপার-স্যাপার ছিলো।
তুষার: কাঁচা বলতে পারিস। তবে আমরা সেটাকে পাঁকা হিসাবেই নিয়েছিলাম। আমরা তখন আঠারো বছর বয়স পার হয়ে সদ্য প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছি। তাই আমরা ধরে নিয়েছিলাম যে, প্রাপ্তবয়স্ক যেহেতু হয়েছি তাই ঐ ছবি দেখা জায়েজ আছে।
আমি: ইস্ট ইউরোপে। সমাজতান্ত্রিক শাসনামলে পর্নো ম্যুভি দেখা নিষেধ ছিলো। তাদের তৈরী পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবিগুলোতে কোন সেক্স দৃশ্য থাকতো না।
তুষার: তাই নাকি? কোন ছবিতেই না?
আমি: না। প্রথম যে রুশ ছবিতে রতিক্রিয়া দেখানো হয় তার নাম ‘মালিনকাইয়া ভেরা’ (ছোট্ট ভেরা) এটা মুক্তি পেয়েছিলো ১৯৮৮ সালে।
আরিফ: মানে পেরোস্ত্রইকা-র পরে।
আমি: রাইট। ১৯৮৪ সালে মিখাইল গর্বাচেভ কর্তৃক পেরোস্ত্রইকা বা পুনর্গঠন নীতি গ্রহন করার পরে।
তোদের মনে আছে, আমরা ক্রেনস আর ফ্লাইং নামে একটি রাশান ফিল্ম দেখেছিলাম?
তুষার: অসাধারণ শৈল্পিক একটা ছায়াছবি ছিলো ওটা। সিনেমার শেষ দৃশ্যে আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি।
আমি: আমার মনে পড়ে ঐ ছবির নায়িকার একটা ইন্টারভিউ আমি একবার দেখেছিলাম। উনার তখন বয়স অনেক হয়েছে। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি একবার বলেছিলেন যে, কোন এক সিনেমার উনার একটি পোজ ছিলো, যেখানে তিনি বুক ফুলিয়ে স্তন একটু উঁচিয়ে পোজ দিয়েছিলেন। এটা পরে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিলো।
আরিফ: তাহলে তো বেশ কড়াকড়ি ছিলো। তা পেরোস্ত্রয়কার পর কি এডাল্ট ফিল্মের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়?
আমি: হ্যাঁ। উঠে যায়। তবে একটা রেস্ট্রিকশন ছিলো।
আরিফ: কি?
আমি: ষোল বৎসর বয়সের নীচে যারা তাদের এডাল্ট ফিল্ম দেখা নিষেধ ছিলো।
তুষার: আমাদের দেশে ঐ বয়সটা বোধহয় আঠারো।
আমি: তবে ভিডিওতে পর্নো দেখা আইনত তখনও নিষিদ্ধ ছিলো।
তুষার: কেউ কি গোপনে দেখতো না?
আমি: সমাজতান্ত্রিক জান্তা-কে একসময় সবাই-ই ভীষণ ভয় পেত। তাই বেআইনি কাজ করার আগে সাধারণ মানুষকে বহুবারই ভাবতে হয়েছে।
আরিফ: আর অসাধারণ মানুষরা বেআইনি কাজ করতো?
আমি: তুই পুলিশের লোক। তুই তো জানিসই, আইনের লোকদের জন্য আইন ভাঙা সবসময়ই সহজ।
তুষার: হা হা। Law সম্পর্কে কি বলা হয় জানিস?
আরিফ: কি?
তুষার: Law হইলো এমন জিনিস যে, লইতে পারতে ল, না লইতে পারলে না ল।
আমরা সবাই সমস্বরে হেসে উঠলাম।
আমি: তবে ১৯৮৮ সাল থেকে এই বিষয়ে শৈথিল্য চলে আসে। চোরাপথে পর্নো ফিল্ম-এর ভিডিও বাজারে ঢুকতে শুরু করে, আর চুপেচাপে মানুষও দেখতে শুরু করে। আইন-এর লোকরা এটা ওভারলুক করতে শুরু করে।
আরিফ: বুঝলাম। এইভাবে চালু হয়ে যায়।
আমি: হ্যাঁ। একসময় টেলিভিশন চ্যানেলেও দেখানো শুরু হয়।
তুষার: ওখানে কি প্রাইভেট টিভি চ্যানেল ছিলো? আমিতো জানি ওখানে শুধু সরকারী টিভি চ্যানেলই ছিলো।
আমি: তোর কথা ঠিক। শুধু সরকারী টিভি চ্যানেলই ছিলো। তবে ১৯৯০ সালে ইউক্রেনের খারকোভ শহরে প্রথম বারের মত প্রাইভেট চ্যানেল চালু হয়।
তুষার: বাহ! তো কি দিয়ে শুরু করলো তারা?
আমি: অনেক কিছুই যা সরকারী চ্যানেলে দেখানো হতো না। সরকারী চ্যানেলগুলোতে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানই ছিলো বেশী, যেটাকে সাধারণ দর্শকরা বোরিং মনে করতো। তাই প্রাইভেট চ্যানেল বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দিয়েই শুরু করেছিলো।
তুষার: এ্যামেরিকান ফিল্ম দেখাতো?
আমি: এ্যামেরিকান ফিল্মই দেখাতো বেশীরভাগ। ঐ ধরনের ফিল্ম যেহেতু দর্শকরা আগে দেখেনাই, তাই তাদের জন্য ঐ চটকদার জিনিস খুব ইন্টারেস্টিং ছিলো।
আরিফ: তার মধ্যে কি এডাল্ট ফিল্ম ছিলো?
আমি: সেটাই বলতে চেয়েছিলাম। ছিলো। ঐ ধরনের ফিল্মগুলোকে বলা হতো ‘এরোটিকা’। ঐ এরোটিক ফিল্ম-ও দেখানো শুরু হলো।
আরিফ: আমরা তো বাংলাদেশে তখন ঐ ধরনের ফিল্ম অনেক দেখে ফেলেছিলাম। বন্ধুবান্ধব একসাথে বসলেই তো ঐসব ফিল্ম দেখতাম।
আমি: আর ওখানে বন্ধু ও বান্ধবী সব একসাথে বসে দেখতাম।
তুষার: তাই নাকি? ভালো উন্নত ছিলো তো? তবে আমাদের দেশে কিন্তু ঐসবের সূত্রপাত হয়েছিলো বোম্বাই ফিল্মগুলোর অর্ধনগ্ন নৃত্য দিয়ে।
আমি: হ্যাঁ। বেশ মনে পড়ে, পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসে থাকার মত রুচিশীল ছিলোনা বোম্বাই ফিল্মগুলো।
আরিফ: আইনিভাবে তো শুরুতে ওগুলো নিষিদ্ধই ছিলো। পরে যখন বোঝা গেলো যে প্রযুক্তিকে ঠেকিয়ে রাখা যায়না। তখন ভিডিও বৈধ করতে বাধ্য হলো সরকার। আর ভিডিও-র হাত ধরে বোম্বাইয়া ফিল্ম-এর অশালীনতা রংচং সবই ঢুকে গেলো।
আমি: ইস্ট ইউরোপীয় জীবনে মানুষের ঐ বিশেষ অনুভূতিটাকে সুরসুরি দেয়ার জন্য এ্যারোটিক ফিল্মগুলো বেশ ভূমিকা রেখেছে। প্রাইভেট টিভি চ্যানেল টনিস-এ এরপর একটা ইন্টারেস্টিং ঘটনা ঘটলো।
আরিফ: কি ঘটলো?
আমি: বয়স্করা হঠাৎ ক্ষেপে গেলো এরোটিক ফিল্মগুলোর উপর। তারা হঠাৎ দাবী করে বসলো, যে ওগুলো ব্রডকাস্ট করা যাবেনা। এবং ‘টনিস’ চ্যানেল কর্তৃপক্ষ অবশেষে বাধ্য হলো ওগুলোর প্রচারনা বন্ধ করতে।
তুষার: বলিস কি? প্রচারনা একেবারে বন্ধ হয়ে গেলো।
আমি: নারে দোস্ত। জানিস তো নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের আগ্রহ থাকে বেশী।
আরিফ: তা তো অবশ্যই।
আমি: ওরা কঠোর আইনের যাতাকলে পিষ্ট ছিলো। সেখান থেকে হঠাৎ ফ্রীডম পেলে যা হয় আরকি। একেবারে বাধ ভেঙে গিয়েছিলো। তাইম ঐ সিদ্ধান্ত টিকলো না। দু’তিন সপ্তাহ বন্ধ থাকার পরই ‘টনিস’ চ্যানেল কর্তৃপক্ষ নানান ধরনের চিঠি পেতে থাকলো।
আরিফ: কি রকম?
আমি: যেমন ইউক্রেণীয় এক তরুনী চিঠিতে লিখলো “আমার বয়স সতের, আমার কোন বয়ফ্রেন্ড নেই। ঐ এরোটিক ম্যুভিগুলোই আমার এমিউজমেন্ট। আপনারা অনুগ্রহ করে এটা বন্ধ করবেন না।” ইত্যাদি।
তারপর আবার তা দেখানো শুরু হল।
তুষার: বোম্বাই ফিল্ম-এর দৃশ্যগুলা একসময় খুব অশালীন মনে করা হতো এবং পরিবারের সবাই মিলে দেখতো না। এরপর কিন্তু ধীরে ধীরে গা সওয়া হয়ে এলো।
আরিফ: আর এখন তো তার চাইতেও বেশী নগ্নতা সবাই মিলেই দেখছে!
আমি: ওখানেও তাই হলো। ধীরে পরিবারের সবাই মিলেই এরোটিক ম্যুভি দেখতে লাগলো। বিষয়টি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।
আরিফ: কোন দেশে বেশী পর্নো দেখা হয়?
আমি: বলা মুশকিল? জরিপে তো অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে।
তুষার: দোস্ত, সার্চ ইঞ্জিন হিসাবে গুগল অনেক দেশেই ব্যবহার হয়না। যেমন চীন, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া। আবার ইউরোপীয় দেশগুলোতেও গুগলের পাশাপাশি অন্যান্য অনেক সার্চ ইঞ্জিনই ব্যবহৃত হয়। তাই ইন্টারনেট সার্চের রেজাল্ট দিয়ে বলা যাবেনা যে কোন দেশে এই প্রবণতা বেশী।
আমি: এম্নিতে বলে যে ভারতে এই প্রবণতা বেশী।
আরিফ: সেখানকার সমাজ পশ্চিমের মত খোলামেলা নয় বলেই হয়তো ওটা হয়। পর্নো দেখে ক্ষুধা মেটায়। দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মত।
আমি: বলা মুশকিল। পশ্চিমা দেশে তো গার্লফ্রেন্ড, প্রেমিকা, ঘরের বউ এইসব কিছু থাকা সত্ত্বেও পর্নোগ্রাফির অনেক চাহিদা।
তুষার: আসলে পুরুষ মাত্রেই পলিগেমিস্ট, তাই এটা হয়। এক পুরুষ বাস্তবে না পেলেও অন্ততপক্ষে পর্দায় অন্য নারীদের যৌনরূপ দেখতে চায়। এভাবে তার চোখের ও কিছুমাত্রায় মনের ক্ষুধা মেটে।
আরিফ: অনেকে বলে পর্নো দেখলে নিঃসঙ্গতা আঁকড়ে ধরে।
তুষার: আমার তো মনে হয় উল্টা, নিঃসঙ্গতা থেকেই পর্নো আসক্তি বাড়ে।
আরিফ: যাদের মেট আছে তারা তো আর পর্নো দেখেনা, দেখার প্রয়োজনটাই তো আর থাকেনা।
আমি: কথা পার্শিয়ালী ঠিক, পুরোপুরি ঠিক না।
আরিফ: কেন?
আমি: এটা ডিপেন্ডস। মেট থাকলে পর্নো দেখার আর প্রয়োজন পড়েনা, কথাটা থিওরেটিকালী ঠিক। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, এটা নানা রকম। আমি অনেককে জানি যে, তাদের মেট আছে, এই কারণে তারা পর্নো কম দেখে। আবার কেউ কেউ আছে যে, মেট থাকার পরও প্রচুর পর্নো দেখে। অনেক ক্ষেত্রে দুজনে একত্রেও পর্নো দেখে।
তুষার: এখানেও রকমফের আছে। অনেক নারী চায়না, যে তার মেট পর্নো দেখুক, এটা তার ভালো লাগেনা। তাই সে তার পুরুষকে নিরুৎসাহিত করে। অনেকে আবার মেটের সাথে সমান আগ্রহ নিয়েই দেখে। আবার অনেকের ভালো লাগেনা যে তার পুরুষ পর্নো দেখুক, কিন্তু যেহেতু সে তার পুরুষকে ঐ আসক্তি থেকে মুক্ত করতে পারছে না, তাই কম্প্রোমাইজিং এ্যাটিচিউডে তার সাথে একসাথে বসেই দেখে।
আরিফ: পর্নো দেখলে রুচিবোধের অবনতি হয়।
আমি: হতে পারে। কারণ সেখানে বিকৃত রুচির অনেক কিছুই দেখায়।
তুষার: মনে কর পর্নোতে যা যা দেখায় কোন পুরুষ তার মেটের সাথে ঐ করতে চাইলো, কিন্তু পারলো না। তাহলে কি দাঁড়ালো? হাতের কাছে ভরা কলস তৃষ্ণা মেটেনা।
আমি: হ্যাঁ, এই আশঙ্কা রয়েছে।
তুষার: মাঝ বয়সী পুরুষদের মধ্যে পর্নো দেখার প্রবনতা বেড়ে যায়।
আমি: এটাকে ‘ক্রাইসিস এইজ’ বলে। এই সময়ে তার মাঝবয়সী স্ত্রীর আর শারীরিক সম্পর্কে কোন আসক্তি থাকেনা। কিন্তু স্বামী বেচারার সেই চাহিদা থেকেই যায়। তাই অগত্যা বাধ্য হয়েই সে, পর্নো দেখে তার চাহিদা মেটায়।
আরিফ: আমি যখন ইয়াং পুলিশ অফিসার ছিলাম। তখন যেসব হোটেলে এসব অনৈতিক কাজ হয়। সেখানে রেড দিতাম। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ধরা পড়তো মাঝবয়সী লোকজন। এই ধর পয়ত্রিশ থেকে পয়তাল্লিশ বছরের মধ্যে। আমি ওদের ভীষণ পিটা দিতাম। কারণ সেই বয়সে আমি মনে করতাম যে ও খারাপ কাজ করছে। আজ আমার এই বয়সে এসে মনে হচ্ছে বেচারাদের দোষ তেমন ছিলনা। এদের অনেকেরই স্ত্রী ইনএ্যাকটিভ থাকে, দৈহিক চাহিদা মেটাতে কোথাও না কোথাও তো তাকে যেতে হবে।
তুষার: এতডিন পরে বোধটা হলো কেন?
আরিফ: ভুক্তভোগীরে ভাই। আমারও তো এখন মাঝবয়স। কিন্তু চাহিদা কমেনি। আমার স্ত্রী আবার এটা পছন্দ করেনা। বলে ‘যৌনতার প্রতি তোমার এত আসক্তি কেন?’ আমি উত্তরে বলি, যৌনতার প্রতি আমার এত আসক্তি যদি না থাকতো, তাহলে তুমি কি আমার স্ত্রী হতে? কোন আসক্তি থেকে একজন পুরুষ একটি নারীকে টেনে নেয়?
ওর কথা শুনে আমরা সবাই সমস্বরে হেসে উঠলাম।
আরিফ: পর্নোগ্রাফির চাহিদা যে আছে সেটা নিঃসন্দেহ। ড্রাগেরও চাহিদা আছে।
আমি: কিন্তু এই দুই নেশাকে কি এক করে দেখা ঠিক হবে। ড্রাগ তো শরীরের অবিচ্ছেদ্য চাহিদা নয়। ড্রাগ অনেকটা বাইরে থেকে ভিতরে কিছু প্রবেশ করানো। জোড় পূর্বক শরীরকে ওটাতে অভ্যস্ত করানো একবার অভ্যাস হয়ে গেলে তা ছাড়ানো খুব কঠিন হয়ে পড়ে ফলে তা হয় মারনঘাতি। অন্যদিকে শারীরিক চাহিদা তো শরীরের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
আরিফ: যে কোন এডিকশনই খারাপ। পর্নো যদি এডিকশনে পরিণত হয় সেটা খারাপ।
তুষার: যৌন সম্পর্ক বিষয়টি না থাকলে Perpetual human civilization continuity থাকতো না।
আরিফ: হ্যাঁ। কথা ঠিকই তবে, এমন জমানা পড়েছে যে, এই জমানায় যেমন তরুণ-তরুণীরা তেমনি বিবাহিত নারী-পুরুষরাও ইন্টারনেটে flirt করে।
আমি: পর্নোর সবাচাইতে খারাপ দিক হলো যে, সেখানে নারীদেহকে পণ্য হিসাবে উপস্থাপন করা হয়। এটা কি ঠিক? নারী কি কেবলই ভোগেরই সামগ্রী?
তুষার: এটা খুবই জটিল প্রশ্ন। তোর দিকে থেকেই চিন্তা করে দেখ। তুই যেই মেয়েটাকে সত্যিকার অর্থে ভালোবেসেছিলি, তাকে নিঃসন্দেহে তুই কখনো ভোগের সামগ্রী মনে করিস নি। ওর সম্পর্কে ওরকম ভাবতেই পারিসনি। তাইনা? কারণ তুই ওকে মন থেকে যেমন ভালোবেসেছিলি, মন থেকে তেমনি শ্রদ্ধাও করেছিলি। অথচ ঐ মেয়েটিকে বাদ দিলে বাকী সব মেয়েকে কি তুই ভোগের পণ্য হিসাবে দেখিসনি?
আরিফ: ইদানিং গোপন ক্যামেরা দিয়ে অনেকের সিক্রেট লাইফের যৌন সম্পর্ক ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এটা একটা বিশ্রি ব্যাপার হচ্ছে। এইসব বিবেচনায় কি পর্নো সাইটগুলো বন্ধ করে দেয়া উচিৎ নয়?
তুষার: দোস্ত, তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে কোন সাইটই বন্ধ করা যাবেনা।
আরিফ: কেন, অনেক সাইটই তো বন্ধ করে দেটা হয়েছে। চীনের কথা ভাব। সেখানে তো ফেসবুক বন্ধ।
তুষার: ঘোড়ার ডিম বন্ধ। আমার প্রথম বৌ-এর এক ভাইস্তা পড়ে চীনে। ওখানে বসে দেদারসে ফেসবুক ইউজ করতেছে। আমার সাথে যোগাযোগও হয় ফেসবুকের মাধ্যমে।
(কথাটা শুনে আরিফ মোটামুটি তাজ্জব বনে গেলো)
আমি: পর্নো সাইটগুলো অনেকটা নিষিদ্ধপল্লী-র মত, আছে থাক, তবে এই নিয়ে বেশী হৈচৈ করার দরকার নেই।
শিউলির কিছুটা আবৃত কিছুটা অনাবৃত প্রস্ফুটিত পদ্মের মত শরীরটির দিকে তাকালাম। এ্যাপার্টমেন্টের আলো-আঁধারী পরিবেশে ঐ কায়া রহস্যময় নিঃসন্দেহে। কিছু কিছু নারী আছে যাদের দিকে তাকালে প্রেম জাগে, আবার কিছু কিছু নারী আছে যাদের দিকে তাকালে কাম জাগে। শিউলির দিকে তাকিয়ে আমার কোনদিনই প্রেম জাগেনি।
শিউলি: আজ মাঝরাতে কফি খাবেন না?
আমি: খাবো। তবে আজ তোমার বানানোর দরকার নেই। তুমি থাকো, আমি বানিয়ে নিয়ে আসি।
এই আলো-আঁধারী পরিবেশে ওকে মন্দিরের ভাস্কর্যের মতই আকর্ষণীয় মনে হচ্ছিলো। সেই যৌন্দর্য্য আর ভাঙাতে চাইলাম না।
কফির কাপ হাতে নিয়ে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই শিউলি বললো,
শিউলি: পর্নো ফিল্ম নিয়ে ইদানিং বেশ আলোচনা হচ্ছে। আপনি কি মনে করেন।
আমি: পর্নো মূলতঃ পুরুষের চাহিদার দিকে তাকিয়েই নির্মান করা হয়। পুরুষরা যা যা দেখতে চায়, পর্নোতে তাই তাই দেখানো হয়।
শিউলি: এরকম করা হয় কেন?
আমি: কারণ পুরুষরাই পর্নো ম্যুভির মূল ক্লায়েন্ট। পুরুষরাই পর্নো বেশী দেখে।
শিউলি: আপনি তাহলে জানেন না, ছেলেদের চাইতে মেয়েরাই পর্নো দেখে বেশী।
ওর কথা শুনে আমিতো তাজ্জব বনে গেলাম।
আমি: কি বলো?
শিউলি: জানি বিধায়ই বলছি। তাছাড়া জরিপও তাই বলে। আমেরিকার নারীদের চেয়েও বেশি পর্নো মুভি দেখেন ভারতীয় নারীরা।
এই মুহূর্তে এই নিয়ে শিউলীর সাথে আলাপ করার কোন ইচ্ছা আমার ছিলো না। আমার আবার সন্ধ্যায় আমাদের বন্ধুদের আড্ডার কথাটা মনে পড়লো, ‘পর্নো সাইটগুলো অনেকটা নিষিদ্ধপল্লী-র মত, আছে থাক, তবে এই নিয়ে বেশী হৈচৈ করার দরকার নেই।’
Arrival
by William Carlos Williams
And yet one arrives somehow,
finds himself loosening the hooks of
her dress
in a strange bedroom—
feels the autumn
dropping its silk and linen leaves
about her ankles.
The tawdry veined body emerges
twisted upon itself
like a winter wind . . . !
(চলবে)
তারিখ: ১৮ই ডিসেম্বর, ২০১৬, ঢাকা
সময়: সন্ধ্যা ৬টা ১৮ মিনিট।