যন্ত্রনার নান্দনিক ছন্দে
——————– রমিত আজাদ
প্লেটোর দর্শন থাক!
কবিরা নির্বাসিত হলেও,
নির্বাসিত হতে দেব না কবিতাকে!
প্লেটো নিজেও তো কবিতা লিখেছিলেন
কোন এক অসতর্ক মুহূর্তে!
শব্দের ছন্দোময় বিন্যাসে
উদ্ভাসিত হয়েছিলো কট্টর দার্শনিকের
শিল্পীত উপলব্ধি!
কবিতা পড়তাম প্রথম জীবনে,
কৈশোরে আর যৌবনের প্রারম্ভে।
তোমার সাথে যখন পরিচয় হলো,
ততদিনে আমার অন্তর থেকে
কবিতার আবেগ তিরোভূত হয়েছে।
নতুন আবেগ হলে তুমি!
নেশা জাগানিয়া এক সাগরিকা।
আমার মূর্ত মনের বিমূর্ত কবিতা!
যতদিন তুমি আমার পাশে ছিলে,
ততদিন আমার প্রয়োজন পড়ে নাই
কোন কেতাবী কবিতার।
তুমিই তো ছিলে আমার গীতিকা!
গোথিক প্রস্তরে খোদিত
এক হেলেনিক চিত্রকর্ম বীথিকা।
আমার আলিঙ্গনে শোভিত তুমি,
পুন্ড্রীয় বাহুবন্ধনে আবদ্ধ
এক নীল চিকোরি অর্কিড সুবাস!
কেমন আপ্লুত হয়ে কবিতা পড়তে!
আর আমি শুনতাম।
সুরভিত ফাগুনের স্পন্দনে
নান্দনিক ছন্দ মন্থনে,
বনানীর স্নিগ্ধ সমীরণে
ভাসতো নিভৃত চারুকাব্য সুনীল অম্বরে।
সনেট, হাইকু, ক্বাসিদা, তানকা, রুবাই,
লিমেরিকের মূর্ছনায় সম্মোহিত দুজনাই!
তবুও সুখ সইলো না!
তারপর তুমি নেই!
দুর্যোগের অযাচিত বর্ষণে
মুছে গেলো পাইনবীথি গন্ধ।
চরম অস্থিরতায় বিরহ মরমে,
কবিতা লিখতে শুরু করলাম।
পদ-স্তবক-আখ্যান, অনুপ্রাস-স্বরানুপ্রাস
সঞ্চারিত করতে শুরু করলাম চরাচরে।
এ তো শুধুই কবিতা নয় কথকতা!
এ যে সাংকেতিক ভাষায়
ইথারে ছড়িয়ে দেয়া বিবাগী মনের কথা!
তোমার বিরহ যাতনায়
আমার নিউরণে জন্ম নিচ্ছে
একের পর এক কবিতার তুমুল কলরব!
হোক সে দুর্বোধ্য ক্রিপ্টোগ্রাফি,
পাঠোদ্ধার না হওয়া হরপ্পার হায়রোগ্লিফ।
তবুও ধরণী জানুক,
স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রনা কতটুকু!
You Were My Poem
————- Ramit Azad