রাজপথের ফুল (পর্ব ১)
——- রমিত আজাদ
ছোটবেলায় ঢাকার রাজপথে অনেক ফুল ফুটতে দেখতাম। সবচাইতে মনোহর মনে হতো শাহবাগের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল-এর সামনের রাজপথের আইল্যান্ডের উপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা বিটপীগুলোর পুরো কায়া জুড়ে গ্রীস্মের খরতাপে ফুটে থাকা রক্তবর্ণ কৃষ্ণচূড়ার বাহার। এছাড়া গোল চত্বরগুলোর সবুজ ঘাসের জমিনে ফুটে থাকা ল্যান্টেনার সৌন্দর্য্যও কম মুগ্ধকর ছিলোনা। কোন অখ্যাত মালি-মালিনীর যাদু হাতের স্পর্শে ওরা ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে যৌবনবতী হতো, আর তারপর মন মাতাতো পথচলা নগরবাসীদের। একসময় ওদের যৌবন ফুরিয়ে যেত, ফ্যাকাসে হতে হতে ঝরে যেত পথের উপরেই। পথচলা নগরবাসীরা ওদের মারিয়ে যেত পদতলে। আঁখি ধায় সামনে উপরে ডানে বাঁয়ে, পদতলে কে পিষ্ট হলো কে রাখে তার খোঁজ। কসমোপলিটন নগরীর ব্যাস্ত জীবনে সেই সময় কার আছে বলুন? পদতলে পিস্ট ওরা যে রাজপথের ফুল!
প্রাক্তন সচিব রফিকুল্লাহ সাহেব ফোন করলেন।
রফিকুল্লাহ সাহেব: হ্যালো কেমন আছেন?
আমি: জ্বী স্যার, ভালো আছি।
রফিকুল্লাহ সাহেব: আপনি বিকালের দিকে একটু ক্লাবে আসতে পারবেন?
আমি: অবশ্যই স্যার। আমি চলে আসবো।
রফিকুল্লাহ সাহেব: অফিসে সমস্যা হবে না?
আমি: না স্যার। কি সমস্যা? আপনি মুরুব্বী মানুষ নিজে আসতে বলছেন, আর আমি একটু সময় ম্যানেজ করতে পারবো না?
রফিকুল্লাহ সাহেব: ওকে আসুন তাহলে। আসলে আপনার সাথে গল্প করতে ভালো লাগে, এই আরকি।
আমি: এ তো আমার সৌভাগ্য স্যার!
রফিকুল্লাহ সাহেব যে টাইম দিয়েছিলেন আমি তার একটু আগেই গিয়ে উপস্থিত হলাম। সমাজের উঁচুতলার ধনী মানুষদের ক্লাব। ঢোকার সাথে সাথে কর্মচারীরা সবাই সালাম ঠুকতে থাকে। সালামের উত্তর দিতে দিতে লাউঞ্জে গিয়ে অতি নরম গদির সোফায় গিয়ে বসলাম। বসার সাথে সাথে গা ডুবে যায়। বসতে না বসতেই ওয়েটার চলে এলো। “কিছু লাগবে স্যার?” ওয়েটারের বিনয়ী প্রশ্ন। আমি বললাম, “না, থাক। এখন না, রফিকুল্লাহ স্যার আসুক”, আমি বললাম।
রফিকুল্লাহ সাহেবের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে মাস ছয়েক হয়। কোন এক কাজে রাজধানীর এই অভিজাত ক্লাবটিতে এসেছিলাম। এখানেই পরিচয় হলো। জানলাম, তিনি একজন প্রাক্তন সচিব। অবসর নিয়েছেন অনেকগুলো বছর আগে। এখন বয়স হয়েছে। বয়স হলে যা হয় আরকি, গপ্পো-গুজব করতে পছন্দ করেন। বেশীরভাগ গল্পই থাকে স্মৃতিচারণমূলক। সেই শিশু বয়স থেকে শুরু করেন, তারপর শেষ করেন উনার চাকুরী জীবনের শেষ পর্যন্ত। লেখালেখি করার অভ্যাস রয়েছে। একসময় জানলাম, তিনি এই ক্লাবের হোটেল কক্ষেই থাকেন। একদিন জানতে চাইলাম, বাসা রেখে তিনি হোটেল কক্ষে থাকেন কেন? তিনি বললেন যে, তিনি একটি বই লিখছেন, এখানে নিরিবিলিতে লিখতে পারেন, তাই এখানে থাকেন। উনার একটিই মেয়ে আছে, বিয়ে হয়ে আমেরিকা প্রবাসী হয়েছে মেয়ে। এখন শুধু তিনি আর তার স্ত্রী দেশে আছেন। ভাবলাম এই হোটেল কক্ষে থাকার খরচ তো অনেক। আমলা থাকা অবস্থায় নিশ্চয়ই ভালো কামিয়েছেন! তাই শেষ বয়সে খরচ করতে দ্বিধা নেই। বই-টই লিখে ফুর্তিতেই আছেন! পরে বুঝলাম আমার ধারনা ভুল হতে পারে। উনার পরিচিত একজনকে একদিন বললাম উনার কথা। তিনি খিক খিক করে হেসে বললেন, “রফিকুল্লাহ? ক্লাবের হোটেলে থাকে? তা তো থাকবেই। ব্যাপার হয়েছে কি জানেন?” আমি বললাম, “জ্বী না, কিছুতো শুনিনি”। তিনি বললেন, “আরে ওসব বইটই কিছু না। আসলে ওর বৌ ওকে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এখন ঐ ক্লাবের রূমে গিয়ে উঠেছে।” আমি আর কি বলবো। একসময়কার জাঁদরেল আমলা, আজ কিনা বৌ তাকে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়, আর উনাকে গিয়ে উঠতে হয় হোটেলে!”
আমার চিন্তায় ছেদ পড়লো, রফিকুল্লাহ সাহেবের কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম।
রফিকুল্লাহ সাহেব: কি? চলে এসেছেন?
আমি: জ্বী স্যার।
রফিকুল্লাহ সাহেব: আগে আগে চলে এসেছেন মনে হয়! রাস্তায় কি, জ্যাম-ট্যাম নেই?
আমি: না, মানে আমার অফিস যেহেতু কাছেই, তাই হেটেই চলে এসেছি। গাড়ী আনিনি। জ্যাম আছে বোধহয়। আসার পথে তো অনেক গাড়ী দেখলাম।
রফিকুল্লাহ সাহেব: হ্যাঁ। এটাতো মূলতঃ একটি রেসিডেন্সিয়াল এরিয়া। অথচ, এখন মনে হয় ফিফটি পার্সেন্টই অফিস হয়ে গিয়েছে। ঢাকা শহরে এখন আর কমার্শিয়াল রেসিডেন্সিয়াল ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া বলে আলাদা আলাদা কিছু নেই। সব মিলে মিশে এককার!
আমি: জ্বী স্যার। ঐরকমই। (মনে মনে ভাবলাম, ‘এই যে অপরিকল্পিত নগরায়ণ, এর পিছনে কি উনাদের মত পদস্থ আমলাদের কোন দায়ভাগ নেই?’)
রফিকুল্লাহ সাহেব: আচ্ছা, আপনার প্রবাস জীবনের ঘটনা কিছু বলেন। আমি তো বাংলাদেশেই জীবনটা কাটিয়ে দিলাম। অবশ্য মাঝে মাঝে নানা পারপাজে বিদেশে যেতে হয়েছে। অনেকগুলো দেশই দেখেছি।
আমি: জ্বী, স্যার। যদিও আমি বিদেশে পড়ালেখা করেছি। কিন্তু সংখ্যার হিসাবে আপনি আমার চাইতেও বেশী দেশ দেখেছেন।
রফিকুল্লাহ সাহেব: তা হবে হয়তো। তবে ঐ দেখা কোন দেখা নয়। সরকারী কাজে কয়েকদিনের সফরে যাওয়া, টাইট প্রোগ্রামের মধ্যে থাকা, আর হোটেলে মধ্যে আরামে থাকা। ওতে কিছু বোঝা যায়না। একটা দেশকে বুঝতে হলে, ওখানে কয়েক বছর বসবাস করা প্রয়োজন।
আমি: জ্বী, স্যার। আমি আপনার সাথে একমত। একটি দেশ বা সমাজকে জানার জন্য দুয়েক বছরও তেমন কিছু নয়। বেশ বেশী সময়ই কাটানো প্রয়োজন। আরো প্রয়োজন সেখানকার ভাষাটা জানা। তাহলেই কেবল ঐ সমাজকে পেনিট্রেট করা যায়।
রফিকুল্লাহ সাহেব: রাইট ইউ আর। এজন্যেই আপনার কাছ থেকে জানতে চাই। তাছাড়া আপনার চিন্তা-ভাবনাও বেশ ট্রান্সপারেন্ট আমি লক্ষ্য করেছি।
আমি: থ্যাংক ইউ স্যার।
রফিকুল্লাহ সাহেব: আচ্ছা, নারী-পুরুষ সম্পর্কটা ওখানে কেমন? শুনেছি ওটা ফ্রী-সেক্স-এর দেশ। বিষয়টা কি ঠিক? মানে আমাদের সাথে পার্থক্য কেমন হবে? আমরাতো অনেক কনজারভেটিভ!
আমি: উঁ, মানে একটু চিন্তা করে বলতে হবে। আসলে আমার যৌবনকালটা ওখানে কেটেছে, দেশে নয়। ফলে তুলনা আমি কতটুকু করতে পারবো, সেটাও একটা প্রশ্ন।
রফিকুল্লাহ সাহেব: দাঁড়ান, একটু চা দিতে বলি। নাস্তা পরে দিতে বলবো।
আমি: না স্যার, নাস্তা লাগবে না। চাই যথেষ্ট।
রফিকুল্লাহ সাহেব: না, নাস্তা লাগবে। আরো দু’জন আসবে।
আমি: আরো দু’জন? কারা।
রফিকুল্লাহ সাহেব: অপেক্ষা করুন। ওদের সাথে বেশী সময় নেব না। তারপর আবার আপনার সাথে কথা বলবো।
চা খেতে খেতে। একজন ভদ্রলোক এসে ঢুকলেন। রফিকুল্লাহ সাহেব আমার কাছে সময় চেয়ে নিয়ে উনার সাথে কথা বলতে লাগলেন।
আমি নিজের মনে চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ রফিকুল্লাহ সাহেব বললেন
রফিকুল্লাহ সাহেব: এই যে, ওর কথা বলছিলাম। আপনি ওর সাথে একটু কথা বলুন। এর মধ্যে আমি উনার সাথে কথা সারছি।
আমি তাকিয়ে দেখলাম খুব অল্পবয়স্ক একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হালকা-পাতলা গড়নের মেয়েটি মোটামুটি সুন্দরী। মেয়েটি সদ্য টীন-এজ পেরিয়েছে হয়তোবা। এত অল্পবয়সী মেয়ের রফিকুল্লাহ সাহেবের সাথে কি কাজ?
আমি: স্যার, আপনি তো ওর কথা আমাকে কিছু বলেননি?
রফিকুল্লাহ সাহেব: ও, আচ্ছা, ও-ই বলবে, আপনি ওর সাথে আলাপ করুন। আমি এর মধ্যে জরুরী কথাটা উনার সাথে সেরে ফেলি।
আমি: (মনে মনে ভাবলাম, ওকে আপনি করে বলবো, নাকি তুমি করে বলবো? তারপর তুমি করেই বললাম) তোমার নাম কি?
“আমার নাম মেঘলা”। মেয়েটি উত্তর দিলো।
‘মেঘলা’! কৈশোরে একটা উপন্যাস পড়েছিলাম, ‘মেঘে ঢাকা তারা’। উপন্যাসটি ভীষণ দাগ কেটেছিলো আমার মনে। সংসারের বড় মেয়ে নীতু, আরো কিছু ভাই-বোন আছে তার, বাবা মারা গিয়েছে, মেয়েটা তরুণ বয়সে একাই সংসার চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। জীবনে চলার পথে তাকে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করতে হচ্ছে, প্রতারিত হতে হচ্ছে। তারমত সংসারের ভালোর জন্য সর্বত্যাগী এই মেয়েগুলো নিজেকে পুঁড়িয়ে শুধু সকলকে দিয়েই গেলো, কিন্তু তারপরেও কারো চোখে পড়ে না, তাই তারা ‘মেঘে ঢাকা তারা’। মেঘলা মেয়েটিকে দেখে আমার হঠাৎ কেন যেন ঐ উপন্যাসটির কথা মনে পড়লো।
আমি: তুমি, কোথায় পড়ো?
মেঘলা: জ্বী, একটা কলেজে, ইন্টারমিডিয়েট পড়ি। মানে পড়া শেষ, এখন সামনে ইন্টার পরীক্ষা দেব।
আমি: ও। তা রফিকুল্লাহ সাহেবের সাথে তোমার কি কাজ?
মেঘলা: জ্বী, আমি একটা চাকরী করি।
আমি: (একটু অবাক হয়ে) তুমি চাকরী করো! এতো অল্প বয়সে!
মেঘলা: জ্বী, কি করবো বলেন? বাবা বেঁচে নাই। কিছু না করলে সংসার চলবে কিভাবে?
আমি: ও। তা কি করো?
মেঘলা: একটা বিদেশী কোম্পানীর মার্কেটিং-এ আছি। প্রোডাক্ট বিক্রি করি।
আমি: কি প্রোডাক্ট?
মেঘলা: এই যে দেখুন। (মেয়েটি ভ্যানিটি ব্যাগ খুলে কিছু বিজ্ঞাপনের কাগজ-পত্র বের করলো। আমি দেখলাম)
আমি: ও। আচ্ছা।
মেঘলা: আপনি কিনবেন কিছু প্রোডাক্ট?
আমি: দেখি! লাগলে পরে বলবো (আমার আসলে ওগুলো কেনার কোন আগ্রহ ছিলো না)
মেঘলা: এই প্রোডাক্ট না নেন না। এটা খুব ভালো একটা আফটার সেভ।
আমি: আমি আফটার সেভ ইউজ করি না।
মেঘলা: আপনি সেভ করেন না?
আমি: নাহ। আমি সেভ করার পর ফিটকিরি মাখি।
মেঘলা: ফিটকিরি!
আমি: হ্যাঁ। ফিটকিরি। সস্তাও হয়, বেশ কার্যকরীও। আফটার সেভ-ফেভ বুজরুকী। পয়সা কামানোর ধান্দা আরকি!
(মেয়েটার মন খারাপ হয়ে গেল)
মেঘলা: তাহলে এইটা নেন।
আমি: এইটা কি?
মেঘলা: এক ধরনের ওষুধ।
আমি: ওষুধ দিয়ে আমি কি করবো? আমি তো অসুস্থ না।
মেঘলা: এটা স্ট্রেংথ বাড়ায়।
আমি: কিসের স্ট্রেংথ?
মেঘলা: শরীরের স্ট্রেংথ বাড়ায়। আবার পুরুষের স্ট্রেংথও বাড়ায়।
আমি: ‘পুরুষের স্ট্রেংথ’ বলতে?
মেঘলা: (মেয়েটি লাজুক হাসলো) ‘পুরুষের স্ট্রেংথ’ বোঝেন না? আপনি পুরুষ না।
আমি: ও। (কি বলবো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। আমি পুরুষটি ধোয়া তুলসী পাতা নই। মেঘলার বিষয়ে কি করবো তাই ভাবছি)
মেঘলা: কি ভাবলেন?
মাত্র টীন-এজ পেরোনো অল্প বয়স্ক মেয়েটির দিকে আমি এবার ভালো করে তাকালাম। হালকা-পাতলা গড়নের মেয়েটি মোটামুটি সুন্দরী। কাঁচা বয়সের কারণে নিষ্পাপ একটা লাবণ্য রয়েছে। এরকম মেয়েদের প্রতি ম্যাচিয়ুরড পুরুষদের লোলুপ দৃষ্টি থাকে। মেয়েটিকে দেখলে স্পষ্টই বোঝা যায়, উচ্চবিত্ত তো নয়ই মধ্য-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানও নয়। নিম্ন-মধ্যবিত্তই হবে।
মেঘলা: আসলে আপনারা প্রোডাক্ট কিনলে আমার খুব উপকার হয়। আমার সংসারে কষ্ট!
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে। তোমার মোবাইল নাম্বারটা দাও। আমি দেখবো।
তারপর আমরা মোবাইল নাম্বার বিনিময় করলাম।
রফিকুল্লাহ সাহেব: কি আপনাদের কথা বলা হলো?
আমি: জ্বী স্যার।
রফিকুল্লাহ সাহেব: দেখেন ওকে যদি কোনভাবে হেল্প করতে পারেন।
আমি: জ্বী স্যার দেখবো।
রফিকুল্লাহ সাহেব: আচ্ছা রাত তো হয়ে গেলো। মেঘলা-কে একটু পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারবেন?
আমি: ওককে স্যার।
আমি: তোমাকে কোথায় পৌঁছে দেব?
মেঘলা: ‘অমুক’ জায়গায়। তবে, আপনার সাথে কি গাড়ী আছে?
আমি: না, গাড়ী আনিনি।
মেঘলা: তাহলে থাক। আপনি আমাকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত পৌঁছে দিন। বাকিটা আমি যেতে পারবো।
আমি: ওকে, চলো তাহলে।
ক্লাব থেকে বেড়িয়ে রিকসা পেতে সময় লাগলো। অভিজাত এলাকাগুলোর এই একটা সমস্যা। গাড়ী আর গাড়ী, কিন্তু রিকসা পাওয়া যায় না। অবশেষে চড়া ভাড়ায় একটা রিকসা পাওয়া গেলো। রিকসাওয়ালারাও এখন ডিমান্ড আর সাপ্লাইয়ের সম্পর্ক জেনে গেছে!
আমি অল্পবয়সী মেয়েটার সাথে রিকশায় উঠলাম। আস্তে করে হুডটা টেনে আমাদের দুজনকে ঢেকে দিলাম। ফিসফিস করে ওর সাথে কথা বলতে শুরু করলাম। কসমোপলিটন নগরীতে সবাই ছুটছে, আমাদের দেখার সময় কি কারো আছে?
আমি: মেঘলা, ঐ ওষুধটি কি স্ট্রেংথ বাড়ায় বলেছিলে?
মেঘলা: পুরুষের স্ট্রেংথ।
আমি: কেমন স্ট্রেংথ?
মেঘলা: (ওর মুখ রক্তিম হয়ে গেলো) আপনি বোঝেন না? আপনি বিবাহিত মানুষ, বুঝবেন না কেন?
আমি: আমি তো বিবাহিত নই।
মেঘলা: (অবাক হয়ে) আপনি এই বয়সেও বিয়ে করেন নি?
আমি: না।
মেঘলা চুপ করে রইলো। ও কি ভাবছে আমি জানি না।
আমি: তোমার বয়স কত?
মেঘলা: জ্বী, আঠারো হয় নাই এখনো। আর একমাস পড়ে আঠারো হবে।
আমি: ও। তাহলে তো তোমার বয়স খুবই কম। তুমি নারী-পুরুষের বিষয়টা বোঝ?
মেঘলা: (একটু সময় চুপ করে রইলো)
আমি: চুপ কেন?
মেঘলা: থাক ওগুলো কথা।
আমি: থাকবে কেন? (ওকে সিডিউস করতে চাইলাম আমি) বিষয়টা কিন্তু খুব ইন্টারেস্টিং।
মেঘলা আবারো চুপ করে রইলো। আমি আলতো করে ডান হাত দিয়ে ওর কোমর জড়িয়ে ধরলাম। ও কোন বাধা দিলো না।
আমি হাতের বাঁধন আর একটু গাঢ় করলাম। ও এবারো কিছু বললো না। আমি আস্তে আস্তে ওর কোমরে হাত বুলাতে লাগলাম। ও নীরব রইলো।
(চলবে)
তারিখ: ১৮ই মে, ২০১৭
সময়: দুপুর ৩টা ১২ মিনিট