সাবরমতী পত্রীর পাঠোদ্ধার
—————— রমিত আজাদ
চিঠিটা এখনও আমার কাছে রাখা আছে।
যদিও এতদিনে
শীতল ভলগা ও বিমল গঙ্গায়,
শান্ত সাবরমতী তথা উদ্বেল পদ্মায়,
বয়ে গিয়েছে দশক দশকের বরষার ঢল।
ছাপিয়েছে দুকূল, ভিজিয়েছে বসন,
তাহাদের মিঠে-নোনা জলে।
দুপারের অসহায় বোবা জমিন,
নীরবে সয়েছে ধীরে,
অধৈর্য প্রেমিকের উন্মত্ত নিষ্পেষণ!
সমগ্র অন্তর জুড়ে!
জমেছে অধঃক্ষেপ গভীর পর্যঙ্কজুড়ে,
টনকে টন কাদাপলি মৃত্তিকার!
সময়ের অকরূণ তীর, কালের কর্কশ স্রোত,
কোন স্পর্শনেই ম্লান হয়নি চিঠিটি!
যদিও ধবল কাগজ হয়েছে হরিদ্রাভ,
পুরুত্ব কমেছে তার সমানুপাতে।
তবুও হয়নি বিবর্ণ, তাহাতে কালির আঁচড়,
বিনম্র প্রণয়ের দাগ।
বাংলা ও গুজরাটি ভাষা দুটি
কেন যেন কাছাকাছি!
তাহাদের শব্দের কোষাগারে
প্রেম আছে, সুখ আছে, দিবস ও রাত্রী আছে।
হতে পারে সুদুর অতীতে
আমাদের আদিগৃহ ছিলো একসাথে!
হিন্দীতে তুমি লিখতে না জানি।
এমন একটি ভাষায় লেখা ছিলো চিঠি,
যা আমাদের দুজনার কাছেই পরদেশী।
তবে দুজনাই বুঝি তাকে কিছু কিছু!
পংক্তিবিন্যাস তার ছিলো না নয়ন কাড়া!
ছোটবড় অগোছালো হরফে হরফে লেখা,
কুঞ্চিত লাইন মেঠোপথবৎ আঁকাবাকা,
ব্যকরণে ছিলো ভুল, ভাষা ও প্রকাশের!
শেষ লাইনে লেখা ছিলো তার,
“চিঠিটির ভাষা ও ব্যাকরণে কোন ভুল খুঁজোনাকো প্লিজ!”
তাই তো,
ভুল খুঁজে কি হবে?
ভাষাতত্ত্ব জ্ঞানের চুলচেরা বিচারের
পরীক্ষক নই তো আমি!
চিঠিটির পুরোটা অবয়ব জুড়ে লেখা
অনুপম ভাষাটির শতভাগই
পড়তে পেরেছিলাম সেদিন।
যেমন প্রাচীন গুহামানব চিত্রিত করেছিলো
সবটাই মনের ভাব, আনাড়ি বর্ণমালায়!
মনের মাধুরী মেশানো হাতেলেখা চিঠির
অন্তর্নিহিত হায়রোগ্লাফির পাঠোদ্ধারে
বিন্দুমাত্র ব্যর্থ হইনি আমি!
———————————————
তারিখ: ৭ই ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
সময়: সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিট
Decoding a letter
—————— Ramit Azad