তোমরা আমাকে বিদেশ দেখাও?
——————- রমিত আজাদ
তোমরা আমাকে বিদেশ দেখাও?
সেখানে কি পলাশ ফুল ফোটে?
সেখানে কি শিমুল ফুল গাছ রাঙায়?
সেখানে কি সুবাস ছড়ায় আনত মাধবীলতা?
পথের দুপাশে ফুটে থাকে থরে থরে কৃষ্ণচূড়া?
সূর্য কি সাজায় দিন স্বপ্নালু সোনালুর মগডালে?
কাশবনের শুভ্রতায় উথাল-পাথাল হয় মন?
সুখের দুপুরগুলোতে কি ঘুঘু ডাকে উদাস সুরে?
দীঘির পদ্মভরা বুকে কি নামে সোহাগী বিকেল?
রাতের আঁধারে কি শুনতে পাও লক্ষীপ্যাঁচার ডাক?
রাতভর শেয়ালের ডাকও তো কত মধুর!
আমি কোন যন্ত্রণায় সন্যাসী হই নি।
যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগের অংক আমি ভালো-ই বুঝি,
তবে সেই অংক কখনো কষতে চাইনি
দেশপ্রেমের সাথে আপোস-রফা করতে।
এ হয়তো আমার চিন্তার ক্ষুদ্রতা,
হয়তো তোমাদের চোখে বড় কোন ভুল,
তবে আমি সেই ভুল নিয়েই থাকতে চাই।
তোমরা সুখের খোঁজে ছুটে যাও
সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে
তারপর সুখ পাও?
“এটা ভালো, সেটা ভালো,
এই আছে, সেই আছে,
থোরাই কেয়ার করি দেশ!”
কত না চটকদার কথার ঢেউ!!!
তারপর বিপদে পড়লেই
ছুটে চলে আসো স্বদেশে!
সমুদ্রযাত্রার ভয়ে আমি ভীত ছিলাম না কোনদিনও,
এ জীবনে অর্ণবতরী ভাসিয়েছি বহুবার।
তবে তার সবই ছিলো সাময়িক,
কোন ঘোরের বসে নয়,
কেবল জগতের বিশালত্বকে জানবার জন্য।
স্বদেশকে চিরতরে ছেড়ে যাবার জন্য নয়।
এখানে,
হুলস্থুল ভরা ঘিঞ্জি শহরও ভেজে উথালী জোছনায়!
চৈতালি রোদ জ্বালায় আকাশ সোমেশ্বরী নির্মলতায়!
মনের মধ্যে, চোখের মধ্যে, বুকের মধ্যে
সর্বক্ষণ বাংলাদেশ।
রাখ তো তোমাদের বিদেশ,
আমার বাংলাদেশই ভালো।
———————————————–
তারিখ: ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮
সময়: দুপুর ২টা ৪৯ মিনিট